কম্পিউটারে বাংলা লেখার কথা ভাবলেই যে সফটওয়্যারটির নাম সবার আগে মাথায় আসে, সেটি হলো অভ্র (Avro Keyboard)। বিশেষ করে যারা নতুন বাংলা টাইপিং শিখতে চান, তাদের জন্য অভ্র যেন এক আশীর্বাদ। এর প্রধান কারণ হলো এর ফোনেটিক (Phonetic) টাইপিং ব্যবস্থা। অর্থাৎ, আপনি ইংরেজি অক্ষরে যা উচ্চারণ করেন, অভ্র সেটিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলায় রূপান্তরিত করে দেয়। এই আর্টিকেলে আমরা অভ্র ব্যবহার করে পিসি কিবোর্ডে বাংলা টাইপিংয়ের আদ্যোপান্ত উদাহরণসহ একটি বিশদ টেবিলের মাধ্যমে তুলে ধরব। লেখাটি বাংলা এবং ইংরেজি মিলিয়ে লেখা হয়েছে, যাতে যেকোনো স্তরের শিক্ষার্থী সহজেই বুঝতে পারে।
অভ্র কিবোর্ড কী এবং কেন এত জনপ্রিয়? (What is Avro Keyboard and Why is it So Popular?)
অভ্র কিবোর্ড হলো একটিฟรี (Free) এবং ওপেন সোর্স (Open Source) বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার যা ২০০৩ সালে মেহদী হাসান খান এবং তার টিম তৈরি করেন। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলা কম্পিউটিংকে সকলের জন্য সহজলভ্য করে তোলা। অভ্রর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এর “English to Bangla” ফোনেটিক টাইপিং পদ্ধতি। আপনাকে বাংলা কিবোর্ডের লেআউট মুখস্থ করার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি ইংরেজি QWERTY কিবোর্ডেই বাংলা লিখতে পারবেন।
অভ্রর জনপ্রিয়তার কিছু কারণ (Reasons for Avro’s Popularity):
- সহজ ব্যবহার (Easy to Use): নতুনদের জন্য এটি অত্যন্ত সহজ। ‘amar’ লিখলে ‘আমার’ হয়ে যায়, এর চেয়ে সহজ আর কী হতে পারে?
- ফোনেটিক লেআউট (Phonetic Layout): উচ্চারণভিত্তিক টাইপিংয়ের কারণে বাংলা বর্ণমালার কোন অক্ষর কোথায় আছে, তা মুখস্থ করতে হয় না।
- একাধিক লেআউট সাপোর্ট (Supports Multiple Layouts): ফোনেটিক ছাড়াও এতে প্রভাত (Probhat), মুনির (Munir), বর্ণনা (Bornona) এবং জাতীয় (Jatiyo) কিবোর্ড লেআউটও রয়েছে।
- সম্পূর্ণ বিনামূল্যে (Completely Free): এটি একটি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার, তাই যে কেউ বিনামূল্যে ডাউনলোড এবং ব্যবহার করতে পারে।
- স্মার্ট সাজেশন (Smart Suggestions): টাইপ করার সময়ে অভ্র আপনাকে সম্ভাব্য শব্দের সাজেশন দেয়, যা টাইপিংকে আরও দ্রুত করে তোলে।
- অটো কারেকশন (Auto Correction): সাধারণ বানান ভুলগুলো অভ্র নিজে থেকেই ঠিক করে নেয়।
- যুক্তবর্ণের সহজ সমাধান (Easy Solution for Conjuncts): যুক্তবর্ণ লেখা অভ্রতে অত্যন্ত সহজ, যা আমরা পরবর্তীতে বিস্তারিত আলোচনা করব।
অভ্র দিয়ে বাংলা টাইপিংয়ের মূল ধারণা (The Basic Concept of Typing with Avro)
অভ্রর মূলমন্ত্র হলো “যা টাইপ করেন, তাই পান” (What you type, is what you get)। এর মানে হলো, বাংলা শব্দের ইংরেজি উচ্চারণ কী-বোর্ডে টাইপ করলে সেটি বাংলায় রূপান্তরিত হয়ে যাবে। যেমন:
- ami = আমি
- banglay = বাংলায়
- gan = গান
- gai = গাই
এই সহজ নিয়মটি ব্যবহার করে আপনি যেকোনো বাংলা বাক্য লিখতে পারেন। তবে স্বরবর্ণ এবং ব্যঞ্জনবর্ণের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম আছে, যা নিচের টেবিলে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
স্বরবর্ণ লেখার নিয়ম (Rules for Typing Vowels)
বাংলা স্বরবর্ণগুলোকে অভ্রতে লেখার জন্য নির্দিষ্ট ইংরেজি অক্ষর ব্যবহার করা হয়। নিচে টেবিলের মাধ্যমে প্রতিটি স্বরবর্ণ, তাদের কার-চিহ্ন (Kar-chihno) এবং উদাহরণ দেওয়া হলো।
Table 1: স্বরবর্ণ (Vowels) এবং তাদের কার-চিহ্ন (Vowel Signs)
বাংলা স্বরবর্ণ | কীভাবে টাইপ করবেন (How to Type) | উদাহরণ (Example) | ফলাফল (Result) | মন্তব্য (Comment) |
অ | o | omar | অমর | ‘o’ হলো ‘অ’-এর ডিফল্ট সাউন্ড। দুটি ব্যঞ্জনবর্ণের মাঝে ‘o’ না দিলে সেগুলো যুক্ত হয়ে যায়। যেমন: ‘bd’ = ব্দ, কিন্তু ‘bod’ = বদ। |
আ | a | amar | আমার | এটি সবচেয়ে সহজ এবং বহুল ব্যবহৃত। |
া (আ-কার) | a | kak | কাক | ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘a’ দিলে আ-কার (া) যুক্ত হয়। |
ই | i | ilish | ইলিশ | |
ি (ই-কার) | i | din | দিন | ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘i’ দিলে ই-কার (ি) যুক্ত হয়। |
ঈ | ee / I | eed / Id | ঈদ | সাধারণত ‘ee’ ব্যবহার করা হয়। তবে বড় হাতের ‘I’ দিয়েও লেখা যায়। |
ী (ঈ-কার) | ee / I | nodee / nodI | নদী | ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘ee’ বা ‘I’ দিলে ঈ-কার (ী) যুক্ত হয়। |
উ | u | ut | উট | |
ু (উ-কার) | u | khub | খুব | ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘u’ দিলে উ-কার (ু) যুক্ত হয়। |
ঊ | oo / U | oosha / Usha | ঊষা | সাধারণত ‘oo’ ব্যবহার করা হয়। বড় হাতের ‘U’ দিয়েও লেখা যায়। |
ূ (ঊ-কার) | oo / U | door / dUr | দূর | ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘oo’ বা ‘U’ দিলে ঊ-কার (ূ) যুক্ত হয়। |
ঋ | rri | rritu | ঋতু | ‘ri’ লিখলে ‘রি’ হবে, তাই ‘ঋ’ লেখার জন্য ‘rri’ ব্যবহার করতে হয়। |
ৃ (ঋ-কার) | rri | krrishok | কৃষক | ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘rri’ দিলে ঋ-কার (ৃ) যুক্ত হয়। |
এ | e | ek | এক | |
ে (এ-কার) | e | megh | মেঘ | ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘e’ দিলে এ-কার (ে) যুক্ত হয়। |
ঐ | oi | oikkyo | ঐক্য | |
ৈ (ঐ-কার) | oi | boikal | বৈকাল | ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘oi’ দিলে ঐ-কার (ৈ) যুক্ত হয়। |
ও | O | Ojon | ওজন | এখানে বড় হাতের ‘O’ ব্যবহার করতে হবে। ছোট হাতের ‘o’ দিলে ‘অ’ হবে। |
ো (ও-কার) | O | bhOr | ভোর | ব্যঞ্জনবর্ণের পরে বড় হাতের ‘O’ দিলে ও-কার (ো) যুক্ত হয়। |
ঔ | ou | oushodh | ঔষধ | |
ৌ (ঔ-কার) | ou | moumachi | মৌমাছি | ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘ou’ দিলে ঔ-কার (ৌ) যুক্ত হয়। |
ব্যঞ্জনবর্ণ লেখার নিয়ম (Rules for Typing Consonants)
ব্যঞ্জনবর্ণ লেখার নিয়মও বেশ সহজ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে একই রকম উচ্চারণের জন্য একাধিক ইংরেজি অক্ষর ব্যবহার হতে পারে, অথবা একটি নির্দিষ্ট অক্ষরের জন্য বড় হাতের (Capital) অক্ষর ব্যবহার করতে হতে পারে।
Table 2: ব্যঞ্জনবর্ণ (Consonants)
বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণ | কীভাবে টাইপ করবেন (How to Type) | উদাহরণ (Example) | ফলাফল (Result) | মন্তব্য (Comment) |
ক | k | kola | কলা | |
খ | kh | khobor | খবর | |
গ | g | goru | গরু | |
ঘ | gh | ghor | ঘর | |
ঙ | ng | rong | রঙ | |
চ | c | ca | চা | |
ছ | ch | chobi | ছবি | |
জ | j | jol | জল | |
ঝ | jh | jhor | ঝড় | |
ঞ | NG | miaNG | মিঞ | ‘NG’ (বড় হাতের) দিয়ে ঞ লেখা হয়। |
ট | t | taka | টাকা | |
ঠ | th | thakur | ঠাকুর | |
ড | d | dim | ডিম | |
ঢ | dh | dhaka | ঢাকা | |
ণ | n | horin | হরিণ | ‘n’ দিয়ে ‘ন’ এবং ‘ণ’ দুটোই লেখা যায়। অভ্র নিজে থেকেই সঠিকটি বসানোর চেষ্টা করে। তবে নির্দিষ্ট করে ‘ণ’ লিখতে চাইলে ‘N’ (বড় হাতের) ব্যবহার করতে পারেন। |
ত | t | tala | তালা | ‘t’ দিয়ে ‘ত’ এবং ‘ট’ দুটোই লেখা যায়। অভ্র ಸಂದರ್ಭ (context) অনুযায়ী সঠিকটি বসায়। |
থ | th | thala | থালা | ‘th’ দিয়ে ‘থ’ এবং ‘ঠ’ দুটোই লেখা যায়। |
দ | d | doi | দই | ‘d’ দিয়ে ‘দ’ এবং ‘ড’ দুটোই লেখা যায়। |
ধ | dh | dhan | ধান | ‘dh’ দিয়ে ‘ধ’ এবং ‘ঢ’ দুটোই লেখা যায়। |
ন | n | nodi | নদী | |
প | p | pata | পাতা | |
ফ | f / ph | fol / phol | ফল | ‘f’ এবং ‘ph’ দুটো দিয়েই ‘ফ’ লেখা যায়। |
ব | b | boi | বই | |
ভ | v / bh | bhat / vat | ভাত | ‘v’ এবং ‘bh’ দুটো দিয়েই ‘ভ’ লেখা যায়। |
ম | m | ma | মা | |
য | z | zodi | যদি | |
র | r | rat | রাত | |
ল | l | lal | লাল | |
শ | sh / S | shasha / maS | শশা / মাস | ‘sh’ এবং ‘S’ (বড় হাতের) দুটো দিয়েই ‘শ’ লেখা যায়। |
ষ | sh | brrishti | বৃষ্টি | ‘sh’ দিয়ে ‘শ’ এবং ‘ষ’ দুটোই লেখা যায়। নির্দিষ্ট করে ‘ষ’ লিখতে চাইলে ‘SH’ ব্যবহার করতে পারেন। |
স | s | sokal | সকাল | |
হ | h | hat | হাত | |
ড় | r | para | পাড়া | ‘r’ দিয়ে ‘র’ এবং ‘ড়’ দুটোই হয়। নির্দিষ্ট করে ‘ড়’ লিখতে ‘R’ (বড় হাতের) ব্যবহার করুন। |
ঢ় | rh | arhai | আড়াই | |
য় | y | moyna | ময়না | |
ৎ | t` (t + backtick) | shot` | সৎ | t-এর পর backtick (`) চিহ্ন (সাধারণত কিবোর্ডের Tab বাটনের উপরে থাকে) দিতে হয়। |
ং | ng | rong | রঙ | |
ঃ | : | du**:**kho | দুঃখ | |
ঁ (Chandrabindu) | ^ | c**^**ad | চাঁদ | যে অক্ষরের উপর চন্দ্রবিন্দু দিতে চান, সেই অক্ষরের পর Shift+6 (^) চাপতে হবে। |
যুক্তবর্ণ লেখার জাদুকরী কৌশল (The Magical Technique of Typing Conjuncts)
বাংলা লেখার সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অংশ হলো যুক্তবর্ণ (Jukto-borno) বা Conjuncts। কিন্তু অভ্রতে এটি লেখা পানির মতো সহজ।
মূল নিয়ম (The Golden Rule): দুটি ব্যঞ্জনবর্ণকে যুক্ত করতে তাদের মাঝে কোনো Vowel (a, e, i, o, u) ব্যবহার করা যাবে না। ডিফল্টভাবে, অভ্র দুটি ব্যঞ্জনবর্ণকে পরপর টাইপ করলে সেগুলোকে যুক্ত করে দেয়। যদি যুক্ত করতে না চান, তাহলে তাদের মাঝে ‘o’ ব্যবহার করতে হবে।
উদাহরণ (Example):
- ‘k’ এবং ‘t’ যুক্ত করে ‘ক্ত’ লিখতে চাইলে, আপনাকে টাইপ করতে হবে
kt
।- rokto = রক্ত
- কিন্তু আপনি যদি ‘কত’ লিখতে চান, তাহলে টাইপ করতে হবে
koto
। ‘k’ এবং ‘t’-এর মাঝে ‘o’ আসায় অক্ষর দুটি যুক্ত হয়নি।
এই একটি মাত্র নিয়ম ব্যবহার করে আপনি প্রায় সমস্ত যুক্তবর্ণ লিখতে পারবেন। নিচে একটি বিস্তারিত টেবিলের মাধ্যমে বহুল ব্যবহৃত কিছু যুক্তবর্ণের উদাহরণ দেওয়া হলো।
Table 3: সাধারণ এবং জটিল যুক্তবর্ণ (Common and Complex Conjuncts)
যুক্তবর্ণ | গঠন (Formation) | কীভাবে টাইপ করবেন (How to Type) | উদাহরণ (Example) | ফলাফল (Result) |
ক্ক | ক + ক | kk | dhakka | ধাক্কা |
ক্ত | ক + ত | kt | shokto | শক্ত |
ক্ষ | ক + ষ | kkh / ksh | kkhoma / kshoma | ক্ষমা |
ক্স | ক + স | ks | box | বক্স |
গ্ধ | গ + ধ | gdh | mugdho | মুগ্ধ |
গ্ন | গ + ন | gn | ognipatro | অগ্নিপাত্র |
ঙ্ক | ঙ + ক | ngk | ongko | অঙ্ক |
ঙ্খ | ঙ + খ | ngkh | shongkho | শঙ্খ |
ঙ্গ | ঙ + গ | ngg | bonggo | বঙ্গ |
চ্চ | চ + চ | cc | bacca | বাচ্চা |
চ্ছ | চ + ছ | cch | iccha | ইচ্ছা |
ঞ্ছ | ঞ + ছ | NGch | baNGcha | বাঞ্ছা |
জ্ঞ | জ + ঞ | gg / jNG | biggan / bijNGan | বিজ্ঞান |
ঞ্চ | ঞ + চ | Nch | oNchol | অঞ্চল |
ট্ট | ট + ট | tt | chutti | ছুট্টি |
ত্ত | ত + ত | tt | uttor | উত্তর |
ত্থ | ত + থ | tth | utthan | উত্থান |
ত্র | ত + র (র-ফলা) | tr | raatri | রাত্রি |
দ্ধ | দ + ধ | ddh | juddho | যুদ্ধ |
দ্ব | দ + ব | dw | dwip | দ্বীপ |
ন্দ | ন + দ | nd | anondo | আনন্দ |
ন্ধ | ন + ধ | ndh | ondho | অন্ধ |
প্ত | প + ত | pt | shupto | সুপ্ত |
প্প | প + প | pp | dhappa | ধাপ্পা |
ব্দ | ব + দ | bd | shobdo | শব্দ |
ব্ধ | ব + ধ | bdh | lubdho | লব্ধ |
ম্প | ম + প | mp | shompod | সম্পদ |
ম্ভ | ম + ভ | mbh | shombhob | সম্ভব |
শ্চ | শ + চ | shc | nishchit | নিশ্চিত |
শ্শ | শ + শ | shsh | nishshobdo | নিঃশব্দ |
ষ্ম | ষ + ম | shm | grishmo | গ্রীষ্ম |
ষ্ক | ষ + ক | shk | purushkar | পুরস্কার |
ষ্প | ষ + প | shp | pushpo | পুষ্প |
ষ্ট | ষ + ট | sT | koshto | কষ্ট |
স্থ | স + থ | sth | sustho | সুস্থ |
হ্ম | হ + ম | hm | brahmon | ব্রাহ্মণ |
হ্ন | হ + ন | hn | bohnishikha | বহ্নিশিখা |
হৃ | হ + ঋ (ঋ-কার) | hri | hridoy | হৃদয় |
রেফ (Reph) এবং ফলা (Phola) লেখার নিয়ম
রেফ (Reph): রেফ (র্ ) লেখার নিয়মটি বেশ মজার। যে অক্ষরের ওপর রেফ হবে, তার আগে ‘r’ টাইপ করতে হয়।
- kormo (কর্ম): এখানে ‘ম’ (m)-এর ওপর রেফ হবে, তাই ‘m’-এর আগে ‘r’ টাইপ করা হয়েছে (
kor**rm**o
নয়)। - borno (বর্ণ): ‘ণ’ (n)-এর ওপর রেফ, তাই ‘n’-এর আগে ‘r’ টাইপ করা হয়েছে।
- dhormo (ধর্ম): ‘m’-এর আগে ‘r’ টাইপ করা হয়েছে।
য-ফলা (Z-phola): য-ফলা (্য) যুক্ত করতে অক্ষরের পরে ‘z’ টাইপ করতে হয়।
- shadhinota (স্বাধীনতা)
- shastho (স্বাস্থ্য)
- obhyas (অভ্যাস)
র-ফলা (R-phola): র-ফলা (্র) যুক্ত করতে অক্ষরের পরে ‘r’ টাইপ করতে হয়।
- prothom (প্রথম)
- grishmo (গ্রীষ্ম)
- shrabon (শ্রাবণ)
ব-ফলা (B-phola): ব-ফলা (্ব) যুক্ত করতে অক্ষরের পরে ‘w’ টাইপ করতে হয়।
- shor (স্বর)
- bishwas (বিশ্বাস)
- dhwoni (ধ্বনি)
কিছু বিশেষ নিয়ম ও টিপস (Some Special Rules and Tips)
- হসন্ত (Hasanta): কোনো অক্ষরের নিচে হসন্ত (্) চিহ্ন দিতে চাইলে, অক্ষরটির পরে backtick (
) কি চাপুন। যেমন:
k+
= ক্। - পূর্ণরূপ এবং সংক্ষিপ্ত রূপ (Full-form and Short-form): কিছু অক্ষরের দুটি রূপ আছে। যেমন ‘a’ টাইপ করলে ‘আ’ হয়, কিন্তু ব্যঞ্জনবর্ণের পরে ‘a’ টাইপ করলে ‘া’ (আ-কার) হয়। এই নিয়মটি সব স্বরবর্ণের কার-চিহ্নের জন্য প্রযোজ্য।
- Capital Letters-এর ব্যবহার: অভ্রতে Capital এবং Small letter-এর মধ্যে পার্থক্য আছে। যেমন:
t
= ত/ট,T
= ত/ট (নির্দিষ্ট করতে)d
= দ/ড,D
= দ/ড (নির্দিষ্ট করতে)n
= ন,N
= ণo
= অ,O
= ও
- ইংলিশ মোডে ফিরে যাওয়া (Switching back to English): বাংলা টাইপ করার সময় যদি ইংরেজি শব্দ লেখার প্রয়োজন হয়, তাহলে
F12
বাটন চাপুন। এতে অভ্র সাময়িকভাবে ইংলিশ মোডে চলে যাবে। আবারF12
চাপলে বাংলা মোডে ফিরে আসবে। - অসম্পূর্ণ ‘অ’ (Implicit ‘o’): অনেক সময় দুটি ব্যঞ্জনবর্ণের মাঝে ‘o’ টাইপ না করলেও অভ্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি ‘অ’ ধ্বনি ধরে নেয় এবং অক্ষর দুটিকে যুক্ত করে না। কিন্তু যুক্তবর্ণ লেখার ক্ষেত্রে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যেন মাঝে কোনো Vowel না থাকে।
- অভ্রর সাজেশন বক্স (Avro’s Suggestion Box): আপনি যখন টাইপ করবেন, অভ্র একটি ছোট বক্সে সম্ভাব্য সঠিক শব্দগুলো দেখাবে। আপনি Up/Down Arrow কি ব্যবহার করে পছন্দের শব্দটি সিলেক্ট করতে পারেন অথবা মাউস দিয়ে ক্লিক করতে পারেন।
- অনুশীলন (Practice): যেকোনো কিছু শেখার মূল চাবিকাঠি হলো অনুশীলন। প্রতিদিন কিছুটা সময় বাংলা টাইপিং অনুশীলন করলে আপনি খুব দ্রুত অভ্রতে দক্ষ হয়ে উঠবেন। যেকোনো বাংলা সংবাদপত্র বা বই দেখে টাইপ করার চেষ্টা করতে পারেন।
উপসংহার (Conclusion)
অভ্র কিবোর্ড বাংলা কম্পিউটিং জগতে একটি বিপ্লব এনে দিয়েছে। এর ফোনেটিক টাইপিং পদ্ধতি বাংলা ভাষাকে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটে আরও বেশি সহজলভ্য করে তুলেছে। উপরের টেবিল এবং নিয়মগুলো অনুসরণ করে যে কেউ খুব সহজে এবং দ্রুত পিসি কিবোর্ডে বাংলা টাইপ করা শুরু করতে পারেন। প্রথমদিকে হয়তো কিছু অক্ষর বা যুক্তবর্ণ লিখতে সমস্যা হতে পারে, কিন্তু নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে আপনি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই একজন দক্ষ বাংলা টাইপিস্ট হয়ে উঠতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে, অভ্র কিবোর্ড ইন্সটল করুন এবং বাংলা লেখার জগতে প্রবেশ করুন। Happy Typing!