Microsoft Word, যা সংক্ষেপে MS Word নামে পরিচিত, এটি Microsoft Corporation দ্বারা তৈরি একটি শক্তিশালী Word Processing Software। লেখালেখি সংক্রান্ত প্রায় সকল কাজের জন্য, যেমন: চিঠি, সিভি (CV), রিপোর্ট, বই, অ্যাসাইনমেন্ট ইত্যাদি তৈরির জন্য এটি সারা বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত একটি অ্যাপ্লিকেশন। এর সহজ ইন্টারফেস এবং শক্তিশালী ফিচারগুলোর জন্য এটি ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে প্রফেশনাল পর্যন্ত সকলের কাছেই জনপ্রিয়।
এই আর্টিকেলে আমরা MS Word-এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ টুলস এবং ফিচার নিয়ে টেবিলের মাধ্যমে বিস্তারিত আলোচনা করব।
১. MS Word পরিচিতি এবং ইন্টারফেস (Introduction & Interface)
যেকোনো কাজ শুরু করার আগে তার পরিবেশ বা Interface সম্পর্কে জানা জরুরি। নিচে MS Word-এর মূল স্ক্রিনের বিভিন্ন অংশ নিয়ে আলোচনা করা হলো।
অংশের নাম (English Name) | অংশের নাম (বাংলা নাম) | কাজ ও বিবরণ (Description & Purpose) |
Ribbon | রিবন | এটি মেন্যু বারের নিচে থাকা একটি বড় অংশ যেখানে বিভিন্ন Tab-এর অধীনে সকল কমান্ড এবং টুলস গ্রুপ আকারে সাজানো থাকে। যেমন: Home, Insert, Design ইত্যাদি। |
Tabs | ট্যাব | রিবনের উপরের দিকে থাকা বিভিন্ন মেন্যু (Home, Insert, Page Layout, etc.)। প্রতিটি ট্যাবে সম্পর্কিত কমান্ডগুলো একসাথে থাকে। |
Quick Access Toolbar | কুইক অ্যাক্সেস টুলবার | স্ক্রিনের একদম উপরে বাম দিকে থাকা একটি ছোট বার। এখানে সচরাচর ব্যবহৃত কমান্ডগুলো (যেমন: Save, Undo, Redo) রাখা যায়, যাতে দ্রুত কাজ করা যায়। |
Title Bar | টাইটেল বার | এটি ডকুমেন্টের নাম প্রদর্শন করে। নতুন ডকুমেন্টের ডিফল্ট নাম থাকে “Document1″। Save করার পর আপনার দেওয়া নামটি এখানে দেখাবে। |
Ruler | রুলার | পেইজের মার্জিন, ট্যাব এবং প্যারাগ্রাফের ইনডেন্ট (indent) ঠিক করার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। এটি হরিজন্টাল এবং ভার্টিকাল দুইভাবেই থাকতে পারে। |
Document Area / Text Area | ডকুমেন্ট এরিয়া | এটি হলো সাদা ক্যানভাসের মতো মূল জায়গা যেখানে আপনি আপনার লেখা টাইপ করবেন, ছবি যোগ করবেন বা টেবিল বানাবেন। |
Status Bar | স্ট্যাটাস বার | স্ক্রিনের নিচে থাকা একটি বার। এখানে পেইজ নম্বর, শব্দ সংখ্যা (Word Count), ভাষা এবং জুম লেভেল (Zoom Level) দেখা যায়। |
Zoom Control | জুম কন্ট্রোল | স্ট্যাটাস বারের ডানদিকে থাকে। এটি ব্যবহার করে আপনি ডকুমেন্টকে বড় (Zoom In) বা ছোট (Zoom Out) করে দেখতে পারবেন। |
২. হোম ট্যাব (The “Home” Tab) – সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ট্যাব
ডকুমেন্ট তৈরি এবং ফরম্যাটিং-এর জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় Home Tab। এর অধীনে থাকা বিভিন্ন গ্রুপ এবং তাদের কাজ নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো।
ক) Clipboard Group
ফিচার/অপশন (Feature/Option) | আইকন (Icon) | কাজ ও বিবরণ (Description & Purpose) | উদাহরণ (Example) |
Cut | ✂️ | কোনো লেখা বা ছবিকে এক জায়গা থেকে কেটে (remove) অন্য জায়গায় পেস্ট করার জন্য। শর্টকাট: Ctrl + X। | একটি প্যারাগ্রাফ সিলেক্ট করে Cut করুন, তারপর অন্য পেইজে গিয়ে Paste করুন। প্যারাগ্রাফটি প্রথম স্থান থেকে সরে যাবে। |
Copy | 📄📄 | কোনো লেখা বা ছবির একটি অনুলিপি (duplicate) তৈরি করার জন্য, যা অন্য জায়গায় পেস্ট করা যাবে। মূল লেখাটি আগের জায়গায় ঠিক থাকবে। শর্টকাট: Ctrl + C। | একটি লাইন সিলেক্ট করে Copy করুন, তারপর নিচে কয়েকবার Paste করুন। দেখবেন একই লাইন বারবার আসছে। |
Paste | 📋 | Cut বা Copy করা আইটেমকে ডকুমেন্টের কোনো স্থানে বসানোর জন্য। শর্টকাট: Ctrl + V। | Copy বা Cut করার পর কার্সরটি যেখানে রাখবেন, সেখানে Paste কমান্ড দিলে আইটেমটি বসে যাবে। |
Format Painter | 🖌️ | একটি লেখার স্টাইল (যেমন: ফন্ট, সাইজ, কালার, বোল্ড) কপি করে অন্য লেখায় প্রয়োগ করার জন্য। | একটি লাল এবং বোল্ড করা লেখার উপর কার্সর রেখে Format Painter-এ ক্লিক করুন, তারপর সাধারণ লেখার উপর ড্র্যাগ করুন। দেখবেন সাধারণ লেখাটিও লাল এবং বোল্ড হয়ে গেছে। |
খ) Font Group
এই গ্রুপের মাধ্যমে লেখার appearance বা চেহারা পরিবর্তন করা হয়।
ফিচার/অপশন (Feature/Option) | আইকন (Icon) | কাজ ও বিবরণ (Description & Purpose) | উদাহরণ (Example) |
Font | (e.g., Calibri) | লেখার স্টাইল বা ফন্ট ফ্যামিলি পরিবর্তন করা। যেমন: Times New Roman, Arial, SutonnyMJ (বাংলা)। | আপনার লেখার হেডিং সিলেক্ট করে “Times New Roman” ফন্ট দিন, আর মূল টেক্সটকে “Calibri”-তে রাখুন। |
Font Size | (e.g., 12) | লেখার আকার ছোট বা বড় করা। পয়েন্ট (pt) এককে মাপা হয়। | সাধারণ লেখার জন্য সাইজ 12 pt এবং হেডিংয়ের জন্য 14 pt বা 16 pt ব্যবহার করা হয়। |
Bold | B | লেখাকে মোটা বা গাঢ় (bold) করে হাইলাইট করার জন্য। শর্টকাট: Ctrl + B। | কোনো গুরুত্বপূর্ণ শব্দকে এভাবে দেখানো হয়। |
Italic | I | লেখাকে সামান্য ডানদিকে হেলানো বা বাঁকা (italic) করার জন্য। শর্টকাট: Ctrl + I। | কোনো বইয়ের নাম বা বিশেষ টার্ম এভাবে লেখা হয়। |
Underline | U | লেখার নিচে একটি দাগ (underline) দেওয়ার জন্য। শর্টকাট: Ctrl + U। | কোনো লিংকের ঠিকানা বা হেডিংকে <u>আন্ডারলাইন</u> করা যেতে পারে। |
Strikethrough | ~~abc~~ | লেখার মাঝখান দিয়ে একটি দাগ টেনে দেওয়ার জন্য, যা বোঝায় লেখাটি বাতিল করা হয়েছে। | আগের দাম ছিল <del>৳৫০০</del>, বর্তমান দাম ৳৪৫০। |
Subscript | X₂ | লেখার বেইজলাইনের নিচে ছোট করে কিছু লেখা। | পানির রাসায়নিক সংকেত: H₂O। এখানে ‘2’ হলো সাবস্ক্রিপ্ট। |
Superscript | X² | লেখার বেইজলাইনের উপরে ছোট করে কিছু লেখা। | গাণিতিক সূত্র: (a+b)² = a² + 2ab + b²। এখানে ‘2’ হলো সুপারস্ক্রিপ্ট। |
Change Case | Aa | সিলেক্ট করা লেখার case পরিবর্তন করা। যেমন: Sentence case, lowercase, UPPERCASE, Capitalize Each Word। | “hello world” কে “UPPERCASE” দিয়ে “HELLO WORLD” বানানো যায়। |
Text Highlight Color | highlighter | লেখার পেছনে একটি রঙিন হাইলাইট যুক্ত করা, ঠিক যেমন আমরা বইতে হাইলাইটার পেন ব্যবহার করি। | জরুরি কোনো তথ্যকে হলুদ রং দিয়ে হাইলাইট করা। |
Font Color | A | লেখার রং পরিবর্তন করা। ডিফল্ট রং কালো থাকে। | হেডিংকে <font color=”blue”>নীল</font> বা <font color=”red”>লাল</font> রং দেওয়া যেতে পারে। |
গ) Paragraph Group
এই গ্রুপের মাধ্যমে প্যারাগ্রাফ বা অনুচ্ছেদের অ্যালাইনমেন্ট, স্পেসিং, নাম্বারিং ইত্যাদি ঠিক করা হয়।
ফিচার/অপশন (Feature/Option) | আইকন (Icon) | কাজ ও বিবরণ (Description & Purpose) | উদাহরণ (Example) |
Bullets | bullets | তালিকা (list) তৈরির জন্য প্রতিটি আইটেমের সামনে সাংকেতিক চিহ্ন (•, o, ✓) যুক্ত করা। | কেনাকাটার তালিকা: <ul><li>চাল</li><li>ডাল</li><li>তেল</li></ul> |
Numbering | numbering | তালিকা তৈরির জন্য প্রতিটি আইটেমের সামনে ক্রমিক নম্বর (1, 2, 3) বা অক্ষর (a, b, c) যুক্ত করা। | পরীক্ষার ধাপসমূহ: <ol><li>আবেদনপত্র জমা দিন।</li><li>অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করুন।</li><li>লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুন।</li></ol> |
Align Left | align left | প্যারাগ্রাফের সকল লাইনকে পেইজের বাম মার্জিনের সাথে সমানভাবে সাজানো। শর্টকাট: Ctrl + L। | বেশিরভাগ বই এবং ডকুমেন্টে এই অ্যালাইনমেন্ট ব্যবহৃত হয়। |
Center | align center | প্যারাগ্রাফের সকল লাইনকে পেইজের মাঝখানে সেট করা। শর্টকাট: Ctrl + E। | কবিতার শিরোনাম বা কোনো নিমন্ত্রণপত্রের হেডিং মাঝখানে রাখা হয়। |
Align Right | align right | প্যারাগ্রাফের সকল লাইনকে পেইজের ডান মার্জিনের সাথে সমানভাবে সাজানো। শর্টকাট: Ctrl + R। | সাধারণত তারিখ বা ঠিকানা লেখার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। |
Justify | align justify | প্যারাগ্রাফের লাইনগুলোকে এমনভাবে সাজানো যাতে বাম এবং ডান উভয় মার্জিন সমান থাকে। এতে লেখাকে দেখতে সুন্দর লাগে। শর্টকাট: Ctrl + J। | সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন এবং বইয়ের কলামে এটি বেশি দেখা যায়। |
Line and Paragraph Spacing | line spacing | একটি লাইনের সাথে অন্য লাইনের এবং একটি প্যারাগ্রাফের সাথে অন্য প্যারাগ্রাফের মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা (space) কমানো বা বাড়ানো। | সাধারণত 1.5 line spacing ব্যবহার করলে লেখা পড়তে সুবিধা হয়। |
Shading | shading | কোনো প্যারাগ্রাফ বা লেখার الخلفية (background)-কে রং দিয়ে পূর্ণ করা। | কোনো টেবিলের হেডিং বা বিশেষ কোনো প্যারাগ্রাফকে আলাদাভাবে বোঝানোর জন্য হালকা শেডিং ব্যবহার করা হয়। |
Borders | borders | কোনো প্যারাগ্রাফ বা পেইজের চারপাশে বর্ডার বা সীমারেখা দেওয়া। | একটি প্যারাগ্রাফকে বক্সের মধ্যে দেখানোর জন্য “Outside Borders” ব্যবহার করা হয়। |
৩. ইনসার্ট ট্যাব (The “Insert” Tab) – ডকুমেন্টে নতুন কিছু যোগ করা
ডকুমেন্টে টেক্সট ছাড়াও অন্যান্য উপাদান, যেমন—টেবিল, ছবি, চার্ট ইত্যাদি যোগ করার জন্য Insert Tab ব্যবহার করা হয়।
ক) Tables Group
টেবিল হলো ডেটা বা তথ্যকে সারি (Row) এবং কলাম (Column)-এ সুন্দরভাবে সাজিয়ে উপস্থাপন করার একটি উপায়।
ফিচার/অপশন (Feature/Option) | কাজ ও বিবরণ (Description & Purpose) | উদাহরণ (Example) |
Insert Table | সারি (Row) এবং কলাম (Column) নির্দিষ্ট করে দিয়ে টেবিল তৈরি করা। আপনি ড্র্যাগ করে অথবা নম্বর লিখে টেবিল বানাতে পারবেন। | শিক্ষার্থীদের নাম, রোল এবং জিপিএ রাখার জন্য একটি ৩-কলামের টেবিল তৈরি করা। |
Draw Table | পেন্সিলের মতো একটি টুল দিয়ে নিজের ইচ্ছামতো টেবিলের সেল, সারি বা কলাম আঁকা যায়। এটি জটিল টেবিল ডিজাইনের জন্য útil। | একটি রুটিনের টেবিল বানানোর সময়, যেখানে কিছু সেল বড় এবং কিছু ছোট, সেখানে Draw Table ব্যবহার করা সুবিধাজনক। |
Convert Text to Table | কমা (,), ট্যাব (Tab) বা অন্য কোনো চিহ্ন দিয়ে আলাদা করা লেখাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টেবিলে রূপান্তর করা। | নাম,রোল,ফোন <br> করিম,১০১,০১৯... <br> রহিম,১০২,০১৭... <br> এই লেখাকে সিলেক্ট করে Convert Text to Table দিলে এটি একটি টেবিলে পরিণত হবে। |
Table Design & Layout (Contextual Tabs) | টেবিল সিলেক্ট করলে রিবনে Table Design এবং Layout নামে দুটি নতুন ট্যাব আসে। Table Design দিয়ে টেবিলের রং, স্টাইল, বর্ডার পরিবর্তন করা যায়। Layout দিয়ে সারি/কলাম যোগ বা حذف করা, সেল মার্জ (merge) বা স্প্লিট (split) করা যায়। | Merge Cells: টেবিলের শিরোনাম লেখার জন্য প্রথম সারির সবগুলো সেলকে Merge করে একটি বড় সেল বানানো হয়। <br> Insert Below: একটি সারির নিচে নতুন আরেকটি সারি যোগ করা। |
টেবিল ফরম্যাটিং এর বিস্তারিত উদাহরণ:
ধরুন, আমরা একটি ছাত্রের মার্কশিট বানাবো।
- Insert > Table এ যান এবং 4×5 একটি টেবিল নিন (4 কলাম, 5 সারি)।
- প্রথম সারির সেলগুলোকে সিলেক্ট করে Layout > Merge Cells এ ক্লিক করুন। এবার এখানে লিখুন “Student Marksheet”।
- দ্বিতীয় সারির কলামগুলোতে হেডিং লিখুন: Subject, Total Marks, Obtained Marks, Grade।
- হেডিং সারিটি সিলেক্ট করে Home > Bold করুন এবং Center অ্যালাইনমেন্ট দিন।
- Table Design ট্যাব থেকে আপনার পছন্দের একটি ডিজাইন (e.g., a blue-themed style) সিলেক্ট করুন যাতে টেবিলটি দেখতে আকর্ষণীয় লাগে।
- এখন বাকি সারিগুলোতে ডেটা পূরণ করুন।
খ) Illustrations Group
ডকুমেন্টকে আরও আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল করার জন্য ছবি বা অন্যান্য গ্রাফিক্স যোগ করা হয়।
ফিচার/অপশন (Feature/Option) | কাজ ও বিবরণ (Description & Purpose) | উদাহরণ (Example) |
Pictures | আপনার কম্পিউটার বা ডিভাইস থেকে কোনো ছবি (image file) ডকুমেন্টে যোগ করার জন্য। | আপনার জীবনবৃত্তান্ত বা CV-তে নিজের একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি যোগ করা। |
Online Pictures | ইন্টারনেট থেকে সরাসরি ছবি খুঁজে ডকুমেন্টে যোগ করা। Microsoft-এর Bing সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে এটি কাজ করে। | পরিবেশ দূষণের উপর একটি আর্টিকেল লেখার সময়, প্রাসঙ্গিক ছবি অনলাইন থেকে খুঁজে যোগ করা। |
Shapes | বিভিন্ন জ্যামিতিক আকার যেমন—বৃত্ত, বর্গ, ত্রিভুজ, তীর চিহ্ন (arrow), ফ্লোচার্ট সিম্বল ইত্যাদি যোগ করা। | একটি প্রসেস ডায়াগ্রাম বানানোর জন্য তীর চিহ্ন এবং বক্স শেপ ব্যবহার করা। |
SmartArt | বিভিন্ন ধরনের তথ্য, যেমন—প্রসেস, সাইকেল, হায়ারার্কি (hierarchy) বা সম্পর্ককে গ্রাফিক্যালি দেখানোর জন্য পূর্ব-ডিজাইন করা টেমপ্লেট। | একটি কোম্পানির সাংগঠনিক কাঠামো (Organizational Chart) দেখানোর জন্য হায়ারার্কি SmartArt ব্যবহার করা হয়। |
Chart | সংখ্যাভিত্তিক ডেটাকে গ্রাফের মাধ্যমে (যেমন: পাই চার্ট, বার চার্ট, লাইন চার্ট) উপস্থাপন করার জন্য। এটি Excel-এর সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করে। | একটি দেশের গত পাঁচ বছরের জনসংখ্যার বৃদ্ধিকে একটি লাইন চার্টের মাধ্যমে দেখানো। |
Screenshot | আপনার কম্পিউটারের স্ক্রিনের যেকোনো অংশের ছবি তুলে (screenshot) সরাসরি ডকুমেন্টে যোগ করা। | সফটওয়্যার টিউটোরিয়াল লেখার সময় প্রতিটি ধাপের স্ক্রিনশট যোগ করা। |
গ) Header & Footer Group
ফিচার/অপশন (Feature/Option) | কাজ ও বিবরণ (Description & Purpose) | উদাহরণ (Example) |
Header | ডকুমেন্টের প্রতিটি পেইজের উপরের অংশে (Top Margin) নির্দিষ্ট লেখা বা ছবি যোগ করা। | একটি কোম্পানির রিপোর্টে প্রতিটি পেইজের Header-এ কোম্পানির লোগো এবং নাম দেওয়া। |
Footer | ডকুমেন্টের প্রতিটি পেইজের নিচের অংশে (Bottom Margin) নির্দিষ্ট লেখা বা ছবি যোগ করা। | বইয়ের প্রতিটি পেইজের Footer-এ লেখকের নাম বা ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেওয়া। |
Page Number | স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিটি পেইজে পৃষ্ঠা নম্বর (Page Number) যোগ করা। আপনি এটি উপরে, নিচে বা পাশে যোগ করতে পারেন। | একটি বড় অ্যাসাইনমেন্ট বা থিসিস পেপারের জন্য পৃষ্ঠা নম্বর দেওয়া অপরিহার্য। |
৪. লেআউট ট্যাব (The “Layout” Tab) – পেইজ সেটআপ
ডকুমেন্টের পেইজের গঠন, যেমন—মার্জিন, সাইজ, কলাম ইত্যাদি ঠিক করার জন্য Layout (কিছু ভার্সনে Page Layout) ট্যাব ব্যবহৃত হয়।
ফিচার/অপশন (Feature/Option) | কাজ ও বিবরণ (Description & Purpose) | উদাহরণ (Example) |
Margins | পেইজের চারপাশে (উপরে, নিচে, বামে, ডানে) কতটা ফাঁকা জায়গা থাকবে তা নির্ধারণ করা। | অফিশিয়াল চিঠির জন্য সাধারণত “Normal” মার্জিন (1 inch on all sides) ব্যবহার করা হয়। |
Orientation | পেইজটি লম্বালম্বি (Portrait) হবে নাকি আড়াআড়ি (Landscape) হবে তা নির্ধারণ করা। | সাধারণ লেখালেখির জন্য Portrait এবং কোনো প্রশস্ত টেবিল বা সার্টিফিকেট ডিজাইনের জন্য Landscape ব্যবহার করা হয়। |
Size | পেইজের আকার নির্ধারণ করা। যেমন: A4, Letter, Legal ইত্যাদি। | প্রিন্ট করার জন্য বাংলাদেশে সাধারণত A4 সাইজের কাগজ ব্যবহৃত হয়। |
Columns | একটি পেইজের লেখাকে একাধিক কলামে (যেমন: সংবাদপত্রের মতো) ভাগ করা। | ম্যাগাজিন বা নিউজলেটারে আর্টিকেল লেখার জন্য লেখাকে দুই বা তিনটি কলামে ভাগ করা হয়। |
Breaks | ডকুমেন্টে বিভিন্ন ধরনের ব্রেক (যেমন: Page Break, Section Break) যোগ করা। Page Break দিয়ে একটি নতুন পেইজ শুরু করা হয়। | একটি অধ্যায় শেষ হলে, নতুন অধ্যায় নতুন পেইজ থেকে শুরু করার জন্য Page Break (শর্টকাট: Ctrl + Enter) ব্যবহার করা হয়। |
৫. রেফারেন্সেস ট্যাব (The “References” Tab) – একাডেমিক কাজের জন্য
গবেষণা, থিসিস বা বড় রিপোর্ট তৈরির জন্য এই ট্যাবটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফিচার/অপশন (Feature/Option) | কাজ ও বিবরণ (Description & Purpose) | উদাহরণ (Example) |
Table of Contents | ডকুমেন্টের হেডিং (Heading 1, Heading 2 ইত্যাদি) ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি সূচিপত্র (Table of Contents) তৈরি করা। | একটি বই বা বড় রিপোর্টের শুরুতে সূচিপত্র যোগ করা, যেখানে প্রতিটি অধ্যায়ের নাম এবং পৃষ্ঠা নম্বর দেওয়া থাকে। |
Insert Footnote | কোনো শব্দ বা লাইনের শেষে একটি ছোট নম্বর দিয়ে পেইজের নিচে সেই বিষয়ে অতিরিক্ত তথ্য বা উৎস উল্লেখ করা। | কোনো কঠিন শব্দের অর্থ বা কোনো তথ্যের উৎস পেইজের নিচে ব্যাখ্যা করার জন্য Footnote ব্যবহার করা হয়। |
Insert Endnote | এটি Footnote-এর মতোই, কিন্তু অতিরিক্ত তথ্য পেইজের নিচে না এসে ডকুমেন্টের একেবারে শেষে যুক্ত হয়। | গবেষণাপত্রে সকল রেফারেন্স ডকুমেন্টের শেষে একসাথে দেখানোর জন্য Endnote ব্যবহার করা যায়। |
Insert Citation & Bibliography | কোনো বই, আর্টিকেল বা ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিলে তার উৎস (source) উল্লেখ করার জন্য Citation যোগ করা। পরে Bibliography অপশন ব্যবহার করে সকল উৎসের একটি তালিকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি করা যায়। | থিসিস পেপারে ব্যবহৃত সকল বই ও জার্নালের তালিকা APA বা MLA স্টাইলে তৈরি করা। |
৬. রিভিউ ট্যাব (The “Review” Tab) – ভুল সংশোধন
ডকুমেন্ট চূড়ান্ত করার আগে ভুলত্রুটি পরীক্ষা করা এবং অন্যদের সাথে কাজ করার জন্য এই ট্যাবটি ব্যবহৃত হয়।
ফিচার/অপশন (Feature/Option) | কাজ ও বিবরণ (Description & Purpose) | উদাহরণ (Example) |
Spelling & Grammar | ডকুমেন্টের বানান (Spelling) এবং ব্যাকরণ (Grammar) সংক্রান্ত ভুলগুলো খুঁজে বের করা এবং সংশোধনের জন্য সাজেশন দেওয়া। | ভুল বানানযুক্ত শব্দের নিচে একটি লাল দাগ (red wavy line) এবং ব্যাকরণগত ভুলের নিচে একটি নীল দাগ (blue wavy line) দেখা যায়। |
Word Count | ডকুমেন্টে মোট কতগুলো শব্দ, অক্ষর, প্যারাগ্রাফ এবং লাইন আছে তা গণনা করা। | যখন আপনাকে ৫০০ শব্দের একটি রচনা লিখতে বলা হয়, তখন Word Count ফিচারটি ব্যবহার করে আপনি শব্দের সংখ্যা ট্র্যাক করতে পারবেন। |
Track Changes | এই অপশনটি চালু করলে ডকুমেন্টে করা যেকোনো পরিবর্তন (লেখা যোগ, ডিলেট বা ফরম্যাট) একটি মার্কআপ হিসেবে দেখা যাবে। এটি গ্রুপ প্রজেক্টের জন্য খুব দরকারি। | আপনার সুপারভাইজার আপনার থিসিস পেপার এডিট করার সময় Track Changes অন করে রাখলে, আপনি সহজেই দেখতে পারবেন তিনি কোথায় কী পরিবর্তন করেছেন। |
Comments | ডকুমেন্টের কোনো নির্দিষ্ট অংশের উপর মতামত বা প্রশ্ন যোগ করার জন্য। | কোনো লাইনের ব্যাপারে সহকর্মীর মতামত জানতে সেই লাইনটি সিলেক্ট করে একটি Comment যোগ করা যায়। |
৭. কিছু গুরুত্বপূর্ণ কীবোর্ড শর্টকাট (Important Keyboard Shortcuts)
দ্রুত কাজ করার জন্য কীবোর্ড শর্টকাট জানা অত্যন্ত জরুরি।
কাজ (Action) | শর্টকাট (Shortcut) |
Save Document (ডকুমেন্ট সেভ করা) | Ctrl + S |
Open Document (ডকুমেন্ট খোলা) | Ctrl + O |
New Document (নতুন ডকুমেন্ট তৈরি) | Ctrl + N |
Print Document (ডকুমেন্ট প্রিন্ট করা) | Ctrl + P |
Undo Last Action (শেষ কাজটি বাতিল করা) | Ctrl + Z |
Redo Last Action (বাতিল করা কাজটি আবার করা) | Ctrl + Y |
Select All (সবকিছু সিলেক্ট করা) | Ctrl + A |
Find Text (শব্দ খোঁজা) | Ctrl + F |
Replace Text (শব্দ বদলানো) | Ctrl + H |
Hyperlink (হাইপারলিংক যোগ করা) | Ctrl + K |
উপসংহার (Conclusion)
Microsoft Word শুধুমাত্র একটি টাইপিং সফটওয়্যার নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ ডকুমেন্ট তৈরির কারখানা। এর ফিচারগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে যেকোনো ধরনের প্রফেশনাল এবং একাডেমিক ডকুমেন্ট খুব সহজে এবং আকর্ষণীয়ভাবে তৈরি করা সম্ভব। এই আর্টিকেলে উল্লেখিত টেবিলগুলো ভালোভাবে অনুশীলন করলে শিক্ষার্থীরা MS Word-এর উপর একটি শক্তিশালী দক্ষতা অর্জন করতে পারবে, যা তাদের শিক্ষাজীবন এবং কর্মজীবনে অনেক সাহায্য করবে। মনে রাখবেন, “Practice makes perfect”। তাই নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট তৈরির মাধ্যমে অনুশীলন চালিয়ে যান। ✍️